একটা প্রশ্ন প্রায়ই শুনতে হয়- আপনি যে ছোট ছোট বাচ্চাদের এমন অপারেশন করেন আপনার খারাপ লাগে না?
না, আমার খারাপ লাগে না। আমি একটু অন্যভাবে চিন্তা করি। আল্লাহ আমাকে একটা সুযোগ দিয়েছেন, আমি আমার হাত দিয়ে একটা বাচ্চার জীবনের গতিপথ পরিবর্তন করে দিতে পারি। এরচেয়ে বড় নেয়ামত আর কি হতে পারে! আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ।
সার্জারী আমার পেশা, তার চেয়েও বেশি প্যাশন! বলা যায় আমি সার্জারী তে আসক্ত!
হ্যা, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমারও টেনশন হয়! ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে আমার অবস্থা দেখে আমার স্ত্রী আমাকে বলত – তুমি সার্জারী বাদ দিয়ে মেডিসিন পড়! কিন্তু আমি একটা বইয়ে পড়েছিলাম – It is normal to have some sleepless nights after an intestinal anastomosis! মানে, খাদ্যনালী জোড়া লাগানো র পরে কয়েকটা নির্ঘুম রাত কাটানো সার্জন এর জন্য স্বাভাবিক! এখন অভিজ্ঞতা বাড়ছে, আত্মবিশ্বাস বাড়ছে, টেনশন কমছে। কিন্তু হয়, এখনো টেনশন হয়! যদি সবকিছু পরিকল্পনা মাফিক না হয়! কিছুদিন আগে একজন বিখ্যাত শিশু সার্জন তার এক প্রেজেন্টেশন এ একটা চেকলিস্ট দেখাচ্ছিলেন, একটা সফল সার্জারী র জন্য কি কি করতে হবে – চেকলিস্ট এর শেষ পয়েন্ট টা ছিল – Pray! অর্থাৎ, আপনাকে দোয়া করতে হবে! হ্যা, সবকিছু ঠিকঠাক করার পরেও সবকিছুই সার্জন এর হাতে থাকে না!
হ্যা, কষ্ট হয়। বাবা-মা র কাছে সন্তান দুনিয়ার সবচেয়ে মূল্যবান। সেই বাবা-মা কে যখন বলতে হয়, তার সন্তানের সমস্যা কত জটিল বা সার্জারী কতটা ঝুকিপূর্ণ বা সার্জারী র ফলাফল টা কেন ভালো হয়নি তখন অনেক কষ্ট হয়। কিন্তু কিছু করার থাকে না।
প্রচুর আনন্দ হয়, যখন বাচ্চা সুস্থ হয়ে বাড়ি যায়। অপার্থিব আনন্দ হয়।
সুস্থ থাকুক সব শিশুরা…